কোনো রাজনৈতিক দল নিষিদ্ধের বিষয়ে জনগণই সিদ্ধান্ত নেবে বলে মন্তব্য করেছেন বিএনপি মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর। তিনি বলেন, রাজনৈতিক দলকে নিষিদ্ধ করবার আমরা কারা, জনগণ সিদ্ধান্ত নেবে। এটাতো আরেকটা চক্রান্ত শুরু হয়েছে। দেশে একটা অনিশ্চয়তা, অস্থিরতা আবার শুরু করা জন্য এ ঘটনাগুলো ঘটানো হচ্ছে। যেগুলো ইস্যু না, সেগুলোকে ইস্যু করা হচ্ছে। আমি মনে করি, এটা সম্পর্কে সকলে সজাগ ও সর্তক থাকা দরকার।
শনিবার রাজধানীর মহাখালীতে বিএনপির চেয়ারপারসনের সাবেক উপদেষ্টা ও কূটনীতিক সাবিহ উদ্দিন আহমদের স্মরণ সভায় সাংবাদিকদের প্রশ্নের জবাবে মির্জা ফখরুল এসব কথা বলেন। সাবিহ উদ্দিন আহমেদের বর্ণাঢ্য জীবন-কর্ম তুলে ধরেন তার সহকর্মীরা।
স্মরণ সভায় অংশ নিয়ে অন্তর্বর্তীকালীন সরকারের অর্থ ও বাণিজ্য উপদেষ্টা সালাহউদ্দিন আহমেদ বলেন, সাবিহ উদ্দিন ছিলেন রিয়াল ন্যাশনালিস্ট। দেশ ও জনগণের প্রশ্নে কোনো ক¤প্রমাইজ নেই। আনক¤প্রমাইজিং ছিলেন। এমন মানুষ পাওয়া দুষ্কর। আমরা তার পরিবারের জন্য দোয়া করি।
স্মৃতিচারণ করে বিএনপি মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর বলেন, সাবিহসহ আমরা যারা ছাত্ররাজনীতি শুরু করেছিলাম। আমাদের একটা লক্ষ্য ছিলো-এই সমাজটাকে পরিবর্তন করবো, বদলে দেবো। সেটা সেই সময় সম্ভব হয়নি, সাবিহ চলে গেছেন সরকারি চাকুরিতে। সরকারি চাকুরিতে গেলেও কখনো সেই লক্ষ্য থেকে সরে যায়নি। সাবিহ যেখানেই ছিল সেখানেই দেশের জন্য কাজ করেছে, জনগণের জন্য কাজ করেছে। সবচেয়ে বেশি আমার মনে পড়ে যে, যখন তিনি আমাদের ম্যাডাম বেগম খালেদা জিয়ার সঙ্গে কাজ করেছেন। তখন দেখেছি যে, তিনি সবচেয়ে বেশি দায়িত্বশীলতার সঙ্গে কাজ করেছেন।
শেখ হাসিনার শাসনমালে সরকারের রোষানল ও নির্যাতিত হওয়ার বর্ণনা দিয়ে বিএনপি মহাসচিব বলেন, ওই সময়ে তার ওপরে প্রচণ্ড আক্রমণও হয়েছিল। রিয়াজ রহমানের গুলি লেগেছিল, সাবিহ উদ্দিন আহমেদের গাড়িটা পুড়িয়ে দিয়েছিল, আরেকজনের ওপরও আক্রমণ হয়েছিল। এই সময়গুলো আমরা পার করেছি। বহুবারই বিভিন্ন গ্রেফতার হওয়ার মুহূর্ত থেকে সে বেরিয়ে এসেছে, তার চলে যাওয়াটা আমাদের জন্য কষ্টকর। আমরা যারা এক সঙ্গে ছিলাম তাদের কাছে এটা বেদনার। সাবিহর ছবিটা এখানে দেখে আতকে উঠলাম।
মির্জা ফখরুল বলেন, কোনো কিছুতে ভেঙে পড়ার লোক ছিল না, সাবিহ লড়াই করেছে শেষ পর্যন্ত। আজকে সে থাকলে সবচেয়ে খুশি হতো ফ্যাসিবাদমুক্ত বাংলাদেশ দেখে।
অধ্যাপক মাহবুব উলাহ বলেন, সাবিহ শেষ দিন পর্যন্ত দেশের কথাটি ভেবেছেন, দশের কথাটি ভেবেছেন। দেশপ্রেমের প্রশ্নের কোনো আপোস তিনি করেননি। আমি বিশ্বাস করব, সাবিহ উদ্দিন আহমেদ জান্নাতবাসী হয়েছেন। জান্নাতের সর্বোচ্চ স্থানে আলাহ তাকে স্থান দিয়েছেন।
রাজধানীর মহাখালীর ব্র্যাক সেন্টারের কনফারেন্স হলে প্রয়াত কূটনীতিকের পরিবারের পক্ষ থেকে এই স্মরণ সভার আয়োজন করা হয়। ২০২২ সালের ৩১ অক্টোবর গুলশানের ইউনাইটেড হাসপাতালে চিকিৎসাধীন মারা যান সাবিহ উদ্দিন আহমেদ। মৃত্যুকালে তার বয়স হয়েছিল ৭৬ বছর। ২০০১ সালে খালেদা জিয়ার শাসনামলে সাবিহ উদ্দিন আহমেদ যুক্তরাজ্যে বাংলাদেশের হাইকমিশনার ছিলেন।